মজার মজার কৌতুক পড়ে যদি হাঁসতে হাঁসতে গাল ব্যাথা ও পেটে খিল ধরাতে চান তাহলে আমাদের সঙ্গেই থাকুন , আর Visit করুন - http://www.funnykoutuk.blogspot.com/ শেয়ার করে বন্ধুদেরও হাঁসান । সাথে সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ : যাদের হার্ড দর্বল তারা ভুলেও কৌতুক পড়বেন না। আর পড়লেও নিজ দাযিত্বে পড়বেন। ****: বদিউজ্জামান ( রুবেল )
*** কৌতুক পড়ে যদি হাঁসতে হাঁসতে পেটে খিল ধরাতে চান, গাল দুটো ব্যাথা বানাতে চান , তাহলে Funny Koutuk এই সাইটটি নিয়মিত Visit করুন । যদি বন্ধুদেরও হাসাতে চান তাহলে শেয়ার করুন । সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরন : যারা হার্টের রুগী তারা ভুলেও কৌতুক পড়বেন না, আর যদি পড়েন তাহলে নিজ দায়িত্বে পড়বেন। *** বদিউজ্জামান ( রুবেল ) ***

Friday, January 29, 2016

বৃদ্ধা মাতার উপহার

চার ভাই উচ্চশিক্ষার্থে গৃহ ত্যাগ করেছিল অল্প বয়সেই। অবশেষে মোটামুটি সবাই জীবনে প্রতিষ্ঠিত হল। প্রত্যেকে সমাজের উঁচুতলায় স্থান করে নিল।
বহুবছর পর চার ভাই নিজেদের গ্রামের বাড়ি থেকে বহু দূরে এক শহুরে এলাকায় একত্রিত হল এক নৈশভোজ সভায়। তারা আলোচনা করতে লাগলো, গ্রামের বাড়িতে তাদের বৃদ্ধা মাতাকে কি উপহার দেয়া যায়।
বড় ভাই শ্যামচাঁদ বললো, “মায়ের জন্য আমি এমন পেল্লায় এক বাড়ি বানিয়ে দব না, সেখানে থাকলে- দিব্যি বলচি, মা ভাববে বুঝি ইন্দ্রুপুরীতেই চলে এল। বুজেছিস।”
মেজ ভাই ব্যোমচাঁদ বললো,
“সে আর বলেচ দাদা। আমি মা’র জন্য এমন একটা থিয়েটার গড়ে দব না, ঠাকুরবাড়ির রঙ্গমঞ্চও ফেল হয়ে যাবে। মা লুচি ভাজা খাবে আর বসে বসে ছম্মকছল্লো নাচ দেখবে। ”
শেজভাই উমিচাঁদ তুড়ি ফুটিয়ে বললো, “আমি ভাবছি, মাকে এমন একটা বোম্বাস্টিং মারুতি কিনে দব, যেটায় চড়লে মা মনে করবে গরুড়ের পিঠে চড়ে ব্রহ্মাণ্ড চষে বেড়াচ্ছে। ”
ছোট ভাই কালাচাঁদ বড়ভাইদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছিল। সবার কথার পালা ফুরোলে সে বললো, “শোনো দাদারা। তোমরা তো জানো, মায়ের সমস্ত আগ্রহ গীতা, রামায়ণ, বেদ-বেদান্তে। কিন্তু বুড়িয়ে যাওয়াতে তিনি তো আর বই চোখে ঠাওরে কেতাবগুলো পড়তে পারেন না। তাই আমি ভাবছি মাকে একটা তোতাপাখি দব।”
“তোতা পাখি?”, অবাক হলো বাকি তিনজন।
“সেটা যেন তেন তোতা পাখি নয়গো দাদা, রীতিমত পণ্ডিতেশ্বর!”, বললো কালাচাঁদ। ” মহা মহা সব পণ্ডিত পুরোত নিয়োগ দিয়ে সেটাকে রামায়ণ-মহাভারত-বেদ এর সমস্ত কাণ্ড, সমস্ত শ্লোক, আগে শিখিয়ে পড়িয়ে নেয়া হয়েছে। টাটকা বারো বছর লেগেছে সেটাকে অমন জ্ঞানের ঢেঁকি বানাতে। ওই মহার্ঘ্য পক্ষীকে কিনতেই তো আমার এক এক করে দশ লক্ষটা কড়ি গুনতে হবে।”
সবাই বিষম খেল দরটা শুনে।
” মা সেটাকে যেকোন গ্রন্থের যেকোন শ্লোক আওড়াতে বলুক না কেন, সেটা গড়গড়িয়ে বলে দেবে।”
কালাচাঁদের আইডিয়ার কথা শুনে বাকি ভাইয়েরা বেশ মুগ্ধ হলো।
বেশ কিছুদিন পরে মাতৃদেবী, চার ভাইকে চিঠি লিখলেন-
-“প্রিয় শ্যামচাঁদ। বাবা, তোর বয়েস তো ভালই হয়েছে, কিন্তু তুই এখনও তোর স্বর্গত পিতার মত আমড়া কাঁঠের ঢেঁকিই রয়ে গেলি। তুই এত বড় বাড়ি আমায় করে দিলি, আমি থাকি যার ছোট্ট একটা কামরায়, আর বাকি পুরো বাদশাখানাটা আমাকে দৈনিক তিনবার করে ঝাঁট দিতে হয়। যাই হোক, ভগবান তোর মঙ্গল করুক।”
” প্রিয় ব্যোমচাঁদ। তোর বড়দা যদি হয় অকাল কুষ্মাণ্ড, তাহলে তো তোর জন্ম অদ্যি হয়নি। তুই জানিস, এ তল্লাটে আমার সই-সখি যত ছিল সবাই ইতোমধ্যে পটল তুলেছে। তো বলি, এই বিশাল থিয়েটারের মঞ্চে নটবরের নটীগিরি আমি কি একাই বসে দেখবো, নাকি নিজেই কোমরে আঁচল পেঁচিয়ে এই বয়সে নটাঙ্গির মত নাচতে লেগে যাব। আর এখানে এমন সব বাদ্যি-বাজন হয় আমার কানে তালা লেগে গেল বলে। তবুও ভগবান তোর মঙ্গল করুক আমাকে উপহারটুকু দিয়েছিস বলে।”
– “প্রিয় উমিচাদ। খটমটে বৌমার খপ্পরে পড়ে তোর পাকা মাথাতেও ভালই ঘুন ধরেছে। তুই জানিস, আমার আর রাজ্য চড়ে বেড়ানোর বয়েস নেই। আমি বাসায় থাকি, শ্যাম-নারায়ণ জপি, ভোলা বাজার করে আনে- খাই দাই। এমন রঙাচঙা, চাকাঅলা লোহার খোলটার আমার তেমন দরকারই ছিলনা। তবুও বলি, ভগবান যাতে তোকে দেখে রাখেন। ”
-“প্রিয় কালাচাঁদ। বাপধন আমার। তুই দেখতে হাঁড়ির তলার মত কালো হলেও আসলে তুই-ই হলি আমার কানাই, আমার ঘরের আলো। তোর দেওয়া উপহারটা আমার দিব্যি পছন্দ হয়েছে। জানিসতো, আমি ঠিকঠাক চোখে দেখিনে এখন, তবুও সেটা দেখে আমি ভীষণ খুশি হয়েছি। ভগবান তোর অশেষ মঙ্গল করুক।
পুনশ্চঃ ওই মুরগির ছাওটা খেতে খুব সুস্বাদু ছিল। “

অন্যরা এখন যা পড়তেছে